1. [email protected] : Administrator :
  2. [email protected] : facfltd :
মোরশেদ ইফতার পর্যন্ত বাঁচার আকুতি জানিয়েছিল-গ্রেফতার ৫ - Ekattor Bangladesh TV
May 23, 2025, 12:16 am

মোরশেদ ইফতার পর্যন্ত বাঁচার আকুতি জানিয়েছিল-গ্রেফতার ৫

ডেস্ক নিউজ
  • Update Time : Saturday, April 16, 2022
  • 339 Time View

ইফতার পর্যন্ত বাঁচিয়ে রাখার আকুতি করেও ঘাতকদের হামলা থেকে রক্ষা পাইনি কক্সবাজারের প্রতিবাদি যুবক কুস্তি খেলোয়াড় মোর্শেদ আলী। সূত্র জানায় গত ৭ এপ্রিল জনসম্মুখে এলোপাথাড়িভাবে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা দেশব্যাপী আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর মোরশেদ আলী হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ও হত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি জড়িত ৫ আসামীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম। গত ৭ এপ্রিল ২০২২ ইং বিকাল ৪.৩০ ঘটিকায় কক্সবাজার সদর থানাধীন চেরাংঘর ষ্টেশনের তরকারীর দোকানের সামনে কতিপয় দুস্কৃতিকারী মধ্যযুগীয় কায়দায় দা, চোরা, হাতুড়ি, কিরিচ, লোহার রড, বন্দুক ও লাঠি দিয়ে জনসম্মুখে নির্মম ও নৃশংসভাবে এলোপাথাড়িভাবে কুপিয়ে ও গুলি করে মোরশেদ আলীকে (৪০) উপর্যুপরি আঘাত করে চলে যায়। হামলাকারীরা স্থানীয় ভাবে চিহ্নিত অপরাধী হওয়ায় কেউ তাদের বাঁধা দিতে আসেনি। পরবর্তীতে স্থানীয়রা মুমূর্ষু মোরশেদকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন

 

 

 

প্রকাশ্য দিবালোকে এই নরকীয় হত্যাকান্ড ভিকটিমের এলাকা তথা সারাদেশের মিডিয়াতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের ভাই জাহেদ আলী বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর থানায় ২৬ জন নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৮/১০ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং- ১৭/২২৭, তারিখ ৯ এপ্রিল ২০২২ ইং, ধারা- ১৪৩/১৪৪/৩৪২/৩০২/৩৭৯/৫০৬(২)/৩৪, পেনাল কোড ১৮৬০। ঘটনার প্রতিপৃষ্ঠে জানা যায় যে, ভিকটিমের পরিবারের লোকজন পিএমখালী ইউনিয়নের ১০ নং পানি সেচ স্কিম পরিচালনা করে আসছিল। হত্যাকারী আসামীরা অন্যায়ভাবে জোর পূর্বক ১০ নং পানি সেচ স্কিম নিজেদের দখলে নিয়ে চাষাদের নিকট হতে অতিরিক্ত টাকা দাবীসহ অন্যায় অত্যাচার করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করতে থাকার কারনে ভিকটিমের পরিবারের লোকজন উক্ত স্কিম ফিরে পাওয়ার জন্য চেষ্ঠা করতে থাকলে আসামীরা তাদের উপর ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে। নিহত মোরশেদ আলী ছিলেন একজন অন্যায়ের প্রতিবাদকারী। মোরশেদ আলী দুস্কৃতিকারীদের বিভিন্ন অপকর্মের প্রতিবাদ করায় বিভিন্ন সময় প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল। এমনকি বিভিন্ন সময় পথে ঘাটে আক্রমন করতে গেলে স্থানীয় উপস্থিত লোকজনের কারনে সফল হয় নাই। ঘটনার দিন মোরশেদ বাড়ি হতে বের হয়ে ইফতার সামগ্রী কিনার জন্য কক্সবাজার সদর থানাধীন চেরাংঘর ষ্টেশনের তরকারীর দোকানের সামনে পোঁছলে দুস্কৃতিকারীরা দুই দিকের রাস্তা বন্ধ করে মোরশেদকে মাটিতে ফেলে প্রথমে ধারালো কিরিচ দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় গুরুতর জখম করে। এরপর আসামী আবদুল্লাহ(৩০) এবং আব্দুল আজিজ(২৮) লাঠি ও লোহার রড দিয়ে মোরশেদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি আঘাত করলে মোরশেদ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরবর্তীতে আসামী মোহাম্মদুল হক ধারলো কিরিচ দিয়ে মোরশেদ আলীর ডান হাতের কব্জি কর্তনের উদ্দেশ্যে কোপ দিয়া কব্জি হাত হতে প্রায় বিছিন্ন করে ফেলে। আসামী মোহাম্মদ আলী (৪৫), মোরশেদ আলীর মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য হাতুড়ি দিয়ে মোরশেদ আলীর অন্ডকোষে উপুর্যপুরি আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে।

 

 

সূত্র জানায় বাজারের লোকজন ভিকটিমকে উদ্ধার করার চেষ্ঠা করলে আসামী মোহাম্মদ আলী আগ্নেয়াস্ত্র বের করে ১৫/২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষন করে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্ঠি করে। উপস্থিত লোকজন ঘটনার ভিডিও করতে থাকলে আসামীরা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দেয়। রোজাদার মোরশেদ আলী ইফতার পর্যন্ত বাঁচার আকুতি জানালেও আসামীরা তাকে বাঁচতে দেয়নি। আসামী মাহমুদুল হক ছিল এই নরকীয় হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী। মাহমুদুল তার পরিবারের প্রধান হয়ে সকলের সাথে পরিকল্পনা করে এই নরকীয় হত্যাকান্ড ঘটায় যা একাধিক মিডিয়ায় প্রচারিত হয়েছে। আসামী মোহাম্মদ আলী টাকা পয়সা নিয়ে সম্প্রতি সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরে তাদের যাবতীয় অপরাধ কর্মকান্ড নির্ভিগ্নে পরিচালনা করার লক্ষ্যে অন্যায়ের প্রতিবাদকারী মোরশেদ আলীকে হত্যার জন্য পরিকল্পনা করে এবং অন্যান্য অসামীদের নিয়ে পূর্ব পরিকল্পনামতে প্রকাশ্য দিবালোকে নির্মম ও নৃশংসভাবে এই হত্যাকান্ড ঘটায়। এই নরকীয় হত্যাকান্ডের নেপথ্যে মদদদাতা ছিলেন মাহমুদুল হকের ভাই নুরুল হক। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের মোবাইলে ধারনকৃত ভিডিও ভাইরাল হলে এবং একাধিক মিডিয়াতে আসামী মাহমুদুল সহ হত্যাকারীদের অপকর্মের তথ্য প্রকাশিত হলে তা ভিকটিমের এলাকা তথা সারাদেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। ঘটনার পর হতে অসামীরা আইন শৃংঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপন করে। চাঞ্চল্যকর ও লোম হর্ষক এই হত্যাকান্ডের আসামীদের গ্রেফতারের জন্য র‌্যাব-৭ চট্টগ্রাম বিষয়টি চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহন করে। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী ও ছায়াতদন্ত শুরু করে। নজরদারীর এক পর্যায়ে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম জানতে পারে যে, উক্ত মামলার অন্যতম প্রধান ৫ জন আসামী আইন শৃংঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে গ্রেফতার এড়াতে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ এলাকায় আত্মগোপন করে রয়েছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৫ এপ্রিল ২০২২ ইং র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত এজাহার নামীয় ২ নং আসামী মোহাম্মদ আলী মোহাম্মদ, ৪ নং আসামী মোহাম্মদুল হক, (৫২), উভয় পিতা-মৃত মনির আহম্মদ ফকির, ১৮ নং আসামী আবদুল্লাহ(৩০), ১৯ নং আসামী আব্দুল আজিজ(২৮), উভয় পিতা-মাহমুদুল হক, সন্ধিদ্ধ আসামী নুরুল হক (৫৩), পিতা-মৃত মনির আহম্মদ ফকির, মাইজ পাড়া, ৯ নং ওয়ার্ড, পিএমখালী ইউপি,কক্সবাজার জেলা থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

 

 

 

সূত্র জানায় জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামীরা অপকটে স্বীকার করে যে, ১০ নং সেচ স্কিম পরিচালনা সংক্রান্ত বিষয়ে এলাকার প্রতিবাদী যুবক মোরশেদ আলী তাদের পথের কাটা ছিল। মোরশেদ আলী আসামীদের সকল প্রকার অন্যায়ের প্রতিবাদ করার কারনে এলাকায় আসামীদের প্রকৃত মুখোশ খুলে যাওয়ায় এবং মোরশেদ এর অন্যায়ের প্রতিবাদের কারনে আসামীদের আরো ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশংকায় গ্রেফতারকৃত আসামীসহ এজাহার নামীয় অন্যান্য আসামীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ঘটনার তারিখ ও সময়ে এই নৃশংস ও নির্মম হত্যাকান্ড ঘটায়। আসামীরা এমন পাষন্ড হয় যে, মোরশেদ আলী বার বার রোজার দোহাই দেয় এবং ইফতার পর্যন্ত বাঁচিয়ে রাখার আকুতি জানালেও আসামীরা তার কোন দোহাই বা অনুরোধ রক্ষা না করেই রোজাদার, অন্যায়ের প্রতিবাদকারী,মোরশেদ আলীকে প্রকশ্যে দিবালোকে নৃশংস,

 

 

 

সূত্র জানায় নির্মমভাবে হত্যা করে। মামলার এজাহারে ২৬ জন সহ অজ্ঞাত নামা ৮/১০ জনের নাম উল্লেখ থাকলেও স্থানীয় তদন্তে মাহমুদুল হকের পরিবারের সদস্যরাই হত্যাকান্ডের মূল ছিল মর্মে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

 

 

 

 

গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।.

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved
Theme Customized By LiveTV